জমিদার দর্পণ
নাটকের সমাজ চিত্র
হোসেন, মীর মশাররফ (১৮৪৭-১৯১২) ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক। ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়া
জেলার লাহিনীপাড়ায় তাঁর জন্ম। পিতা মীর মোয়াজ্জেম হোসেন ছিলেন জমিদার। নিজগৃহে মুনশির
নিকট আরবি ও ফারসি শেখার মাধ্যমে মশাররফ হোসেনের লেখাপড়ার হাতেখড়ি হয়। পরে পাঠশালায় গিয়ে তিনি বাংলা ভাষা শেখেন।
মশাররফ হোসেন গতিশীল গদ্য রচনায় সিদ্ধহস্ত
ছিলেন। নাটক ও আত্মজৈবনিক উপন্যাসগুলিতে তিনি সমকালীন সমাজের অসঙ্গতি ও সমস্যার ওপর
তীক্ষ্ণ কটাক্ষপাত করেন। তিনি সাম্প্রদায়িক মনোভাব থেকে মুক্ত ছিলেন। উদার দৃষ্টিকোণ
থেকে ‘গোকুল নির্মূল আশঙ্কা’ প্রবন্ধ লিখে তিনি স্বসমাজ কর্তৃক নিগৃহীত হন। তিনি বঙ্গীয়
সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯১২ সালে তাঁর মৃত্যু হয় এবং পদমদীতে তিনি সমাহিত
হন
জমীদার দর্পন
নাটকের প্রকৃত মূল্য সমাজ চিত্র অংকনে, সামাজিক আনেদনে বৃটিশ শাসনের এক গুরুত্ব পূর্নকালে
ধর্ম ধ্বজী মানুষের মুখোশ উন্মোচন, বিচার ব্যবস্থার
ত্রূটি ও দুনীতি এবং অত্যাচার অবিচার মোচনে
রাজশক্তির প্রতি অহতুক নির্ভরতা ও প্রতিকার প্রার্থনার চিত্র এখানে রূপায়িত। ‘’জমদিার
দর্পনে” প্রতিফলিত সমাজ বাস্তবতার এ চিত্রকে আমরা নিম্নোক্ত ধারা অনুযায়ী আলোচনায় নিয়ে
আসবো।
১. সামাজিক
রাজনৈতিক চিত্র
২.সামাজিক
অর্থনৈতিক চিত্র
৩.সাধারন
সামাজিক সাংস্কৃতিক চিত্র।
চিরস্থায়ী
বন্দোবস্তের সূত্রধরে উনবিংশ শতাব্দীর দিকে সমাজে জমিদারী প্রথা শুরু হয়্ জমিদারদের
আধিপত্য স্থাপিত হয়। এ নাটকে সাধারন কৃয়কদের উপর জমিদারদের অত্যাচারের কহুমাত্রিক এবং
বিচিত্র দিকটি পরিষ্কার ভাবে তুলেধরা হয়েছ্ জমিদারদের লাম্পট্য দোষ, শোষণ কৌশর, প্রজা
পীড়ন ও অর্থের প্রভাবে বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রন এ নাটকের উপতীব্য যা রাজনৈতিক ক্ষমতার
অপব্যবহার মাত্র।
জমিদার দের
এ অত্যাচারের জ্বলন্ত প্রমান হিসেবে মীর মশাররফ হায়ওয়ান আলী চিত্রচি নির্মান করেছেন।
জমীদারদের নারী লোলপুতার জ্বলন্ত সাক্ষী হায়ওয়ান আলীকে আমরা দেখি, গ্রামের দরিদ্র কৃষক
আবুমোল্লাকে স্ত্রীকে সম্ভোগের জন্য সে বিচিত্র ধরনের ফাদ পাতে, আবু মোল্লাকে দরে এনে
বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার উৎপীড়ন করে। আমরা জমিদার দের এ অত্যাচারের চিত্র দেখতে পাই
প্রতম অঙ্কে।
হায়ওয়ান আলীর
উক্তি হতে—
‘’নামাজের
সময় হয়েছে, চল, নামাজ পড়ে আসি। ততক্ষণে হারামজাদাকে ধরে আনুক ……””” । আমরা দেখতে পাচ্ছি
ধর্মের ান্তরালে তারা আশ্রয় নিয়ে অপকর্ম সাধন করত। ধরে এনে আবুকে দেয় শাস্তির এটা চিত্র-
ওকে চোদ্দ পোয়াকরে মাথায় ইট চাপিয়ে দে, তা না হলে ও ন্যাকা ক্রকনোও টাকা দেবে না।
বিনা াপরাধে
আবু মোল্লার নিকট জরিমানা দাবি, ধরে এন নির্যাতন, এসবেও জমিদারদের অত্যাচারের নির্মমতা
প্রকাশ পেয়েছে।
টাকার জন্য
তাকে মেরে মেরে একে বারে খুন করে ফেলব।“”” নূরুন্ন্হোরের এ উক্তি জমিদারদের অত্যাচারের
চিত্র গুলোকে প্রকাশ কর্ এবং এদ্বত সংক্রান্ত নানা অপকর্ম সহ অন্ত:সত্তা নূরুন্নেহারের
মত হাজারো বাঙালি নারীকে ধর্ষণ সমেত হত্যা করলেো তাদের কোন বিচার হয়না। জমীদার দর্পন
নাটকে বিচারের নামে প্রহসনের এ বিষয়টি খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।
এ ষিয়ে একটা
পরিস্কার আলোচনায় আসতে পারিযে ক্ষমতা পেয়ে জমীদার, অধিনস্থ চাকর বাকর সহ সকলে এক বেপরোয়া
জীবন যাপন করতো। এবং এ নাটকের তৃতীয় অঙ্কের প্রথম গ ভাঙ্কে পুলিশ দেরও অত্যাচারের জন্য
পাঠানো হয় তকন
‘’কি>?
পারবিনে, পাত্তেই হবে।(ঘাড়ে ধরিয়া)….. পারবিনে , ওঠাও লাশ ওঠাও।“” তৎকালীন সাধারন এবং
জমিদার পরিবারের একটা সুস্পষ্ট অর্থ নৈতিক চিত্র এ নাটকে ফুটে ওঠেছ্ সাধারন পরিবারের
অধিকাংশ, লোক ছিল কৃষক। তারা জমিদারের অনুগ্রহের উপর নীভরশীল ছিল। অনেক দরিদ্র লোকের
সুযোগ নিয়ে ইংরেজরা তাদের খ্রিস্টধর্ম গ্রহনের পথে প্রবোচনা যোগাত।
২য় অঙ্ক-
২য় গভাঙ্ক--- প্রথম মোসাহেবের উক্তি এর প্রমান বহন করে; ‘’হুজুর খৃষ্টান হওয়া মিছে
মিছি। খ্রিষ্টান হওয়া ওদের কজনয়, তবে যে গিয়েছিল সে কোন কাজ পাবার লোভে’’’। অনেক কে
আবার ধর্ম ব্যবসায়ী হিসেবে দেখতে পাই, তার মধ্যে জিতু মোল্লা এবং হরিদাস অন্যতম, যারা
সত্যের কসম খেয়ে অনর্গল মিথ্যে সাক্ষ্য দিয়ে যেত। আমরা আজকের সভ্যসমাজে প্রচলিত ভিক্ষাব্রত্তিটাকেও সে সমাজের
কৃষ্ণমনি চরিত্রে লক্ষকরি।
সধারন সমাজ
সংস্কৃতির বেশকিছু বিচ্ছিন্ন চিত্র এ নাটকে লক্ষনীয়। জমিদাররা অবসরে তাস খেলতো ও লালসা
সঙ্ক্রান্ত রসিকতা করে সময় কাটাতো। ধিবা বিবাহ এবং তার সামাজিক প্রতিক্রিয়ার ও একটা
চিত্র এ নাটকে লক্ষ্যনীয়
২য় অঙ্কের
২য় গ-ভাঙ্কে…… ‘’’’ না বাবা, তার কাজ নেই, পানায় সেদিনরাড় ক’নে আর তার বরকে বাসর ঘরেই
পাড়ার হিন্দুরা জুটে পুড়িয়ে ফেলছিল…….. ভাগ্যিশ হবিশ ডাক্টার ছিল তাই রক্ষে হলো।‘’’—বড়লোকদের
ক্ষেত্রে ওকে, যত সমস্যা দরিদ্রদের।
দরিদ্রদের
জলপানি হিসেবে চিড়ে, মুড়কি খাওয়ার একটা চিত্রও এ নাটকের ৩য় অংকের ৩য় গভাংকে লক্ষ্য
করা যায়। এবং নারীদের কাথাসেলাইয়ের গ্রমীন চিত্রটিও নট্যকার আমিরনের চরিত্রের মধ্যদিয়ে
তুলেধরেছেন। আবার কথার গুরুত্ব বাড়াতে জমিদার ও তার চেলারা মাঝে মধ্যে আরবি ফারসি বা
হিন্দি মব্দের ব্যবহার ঘটাতো। এ ধরনের অসংক শব্দের ব্যবহারের দৃষ্টান্ত এ নাটকে আছে—
পাচ আদমী
যাও; আবুকো পাকড় লাও, আবি লাও’’’প্রথম অংকে ১ম গ-ভাঙ্কে।
Thanks for ur writing.
ReplyDeleteThanks
ReplyDeleteখুব ভালো লাগলো।।আরো চাই।
ReplyDeleteএতো বানান ভুল কেন?
ReplyDelete