নাটক হিসেবে সাজাহান নাটকের
সার্থকতা আলোচনা কর।
ঐতিহাসিক শেষ পর্যন্ত দ্রষ্টা, কিন্তু সাহিত্যিক
স্রষ্টা।
দ্বিজেন্দ্রলাল
সাজাহান
বা
ঔরংজেবের
চৈতন্যের
গভীরে
ঢুকে
তাদের
অন্তদ্বর্নদ্বকে যেভাবে উন্মোচন করতে পারেন ঐতিহাসিকের পক্ষে তা সম্ভব নয়। টড্-যদুনাথ সরকার মানুষের মনের গভীরে ঢুকতে পারেন
না,
কিন্তু
দ্বিজেন্দ্রলাল তা স্বচ্ছন্ধে করতে পারেন। সাজাহানের চার পুত্র একই সমাজে, একই শ্রেণিতে,
একই
পরিবারে
বড়
হয়ে
উঠলেও
তাঁদের
ব্যক্তিত্বের
গড়ন
ভিন্ন-ভিন্ন
কেন,
তার
বিশ্লেষণ
ইতিহাসে
পাওয়া
যায়
না।
তার
মর্মোদ্ঘাটন
সাহিত্যিকই
করতে
পারেন
সাজাহান একদিকে সম্রাট, অন্যদিকে পিতা।
তাই
বারবার
তার
আচরণে
এক
প্রবল
অন্তর্দ্বন্দ্ব
পরিলক্ষিত
হয়।
কখনো
বলেন,
‘তারা
জানুক
যে
সাজাহান
শুধু
পিতা
নয়
সাজাহান
সম্রাট।
সাজাহান নাটকে মানবচরিত্রগুলির যে এক অনন্ত বিস্তারের ইশারা দ্বিজেন্দ্রলাল নিয়ে আসেন তা ইতিহাসে অসম্ভব। নাটকটির চরিত্রগুলির অমন দীর্ঘ, অলংকারে ঝংকারে
ঝংকৃত
ডায়ালগ
হুবহু
বলে যাওয়া আজকের সময়ে কতটা সম্ভব, বা বললেও তা কতটা গৃহীত হবে, সেই প্রায়োগিক
আলোচনা
আমাদের
বিষয়
নয়।
আমরা
নাট্যসাহিত্য
হিসেবে
সাজাহান
পড়লে
বারবার
অনুভব
করি
: নাটকটি
ইতিহাস-আশ্রিত
হয়েও
কেমনভাবে
ইতিহাস
যা
বলতে
পারে
না,
তা স্বচ্ছন্দে বলে দেয়।
নাটকটি
জীবনের
একটি
সময়
ও পরিসরকে
জীবনের
ভেতর
থেকে
আমাদের
দেখায়।
নাটকটিতে
নাট্যকার
সময়
ও পরিসরকে
নিজের
মতো
করে
ব্যবহার
করেছেন, নির্মাণ করেছেন, সৃষ্টি করেছেন। আর তা সাফল্যের সঙ্গে করতে পেরেছেন বলেই
ইতিহাসের
বড়
সময়ের
ওপর
দাঁড়িয়ে
চরিত্রগুলির
ছোট
সময়
ও ব্যক্তিগত
সময়কে
অন্বিত
করতে
পেরেছেন।৩
ইতিহাসের বড় সময়ের সঙ্গে সাজাহানের মিল লক্ষ করার মতো। নাটকটির আরম্ভ ১৬৫৮-র নভেম্বরে। অল্পদিন আগে সাজাহান অসুস্থতার কারণে দিল্লি থেকে আগ্রা এসেছেন। নভেম্বরের মধ্যপর্বে সুস্থ হয়েছেন কিছুটা। সুজা বঙ্গদেশে বিদ্রোহ করেছে বটে, কিন্তু এখনও সম্রাট নাম নেয়নি। কিন্তু মোরাদ গুর্জরে সম্রাট নাম নিয়ে বসেছে, আর দাক্ষিণাত্য থেকে ঔরংজেব তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে।৪ সুজার বিরুদ্ধে জয়সিংহ ও সোলেমানের বিতর্ক এবং ঔরংজেব-মোরাদের বিরুদ্ধে যশোবন্ত সিংহ ও কাশিম খাঁর যুদ্ধ এবং তার ফলাফল পুরোপুরি ইতিহাসকে অনুসরণ করেছে। দারা, সুজা ও মোরাদের পরিণতিও ইতিহাসসম্মত। সাজাহান ঔরংজেবকে ক্ষমা করছেন - এ ঘটনা ইতিহাসবিরুদ্ধ নয়। ইতিহাসের বড় সময়ের ওপর দাঁড়িয়ে দিলদার, মহামায়া ও পিয়ারার মতো কল্পিত চরিত্রের মাধ্যমে দ্বিজেন্দ্রলাল ছোট সময় ও ব্যক্তিগত সময়কে সৃষ্টি করেছেন।
ইতিহাসের বড় সময়ের সঙ্গে সাজাহানের মিল লক্ষ করার মতো। নাটকটির আরম্ভ ১৬৫৮-র নভেম্বরে। অল্পদিন আগে সাজাহান অসুস্থতার কারণে দিল্লি থেকে আগ্রা এসেছেন। নভেম্বরের মধ্যপর্বে সুস্থ হয়েছেন কিছুটা। সুজা বঙ্গদেশে বিদ্রোহ করেছে বটে, কিন্তু এখনও সম্রাট নাম নেয়নি। কিন্তু মোরাদ গুর্জরে সম্রাট নাম নিয়ে বসেছে, আর দাক্ষিণাত্য থেকে ঔরংজেব তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে।৪ সুজার বিরুদ্ধে জয়সিংহ ও সোলেমানের বিতর্ক এবং ঔরংজেব-মোরাদের বিরুদ্ধে যশোবন্ত সিংহ ও কাশিম খাঁর যুদ্ধ এবং তার ফলাফল পুরোপুরি ইতিহাসকে অনুসরণ করেছে। দারা, সুজা ও মোরাদের পরিণতিও ইতিহাসসম্মত। সাজাহান ঔরংজেবকে ক্ষমা করছেন - এ ঘটনা ইতিহাসবিরুদ্ধ নয়। ইতিহাসের বড় সময়ের ওপর দাঁড়িয়ে দিলদার, মহামায়া ও পিয়ারার মতো কল্পিত চরিত্রের মাধ্যমে দ্বিজেন্দ্রলাল ছোট সময় ও ব্যক্তিগত সময়কে সৃষ্টি করেছেন।
আবার বলেন : ‘কাজ নেই দারা।
তারা
রাজধানীতে
আসুক;
আমি
তাদের
বুঝিয়ে
বলবো।’৫ আবার
ঔরংজেব
চরিত্রের
অন্তর্দ্বন্দ্ব
তাকে
ভিলেন
করে
তোলেনি।
চতুর্থ
অঙ্কের
ষষ্ঠ
দৃশ্যে
কাজীর
বিচারের
পত্রখানি
হাতে
নিয়ে
ঔরংজেব
স্বগতোক্তি
করছেন
: ‘এই
দারার
মৃত্যুদন্ড।
- এ কাজীর বিচার।
আমার
অপরাধ
কি?
- আমি
কিন্তু
- না,
কেন
- এ বিচার!
বিচারকে
কলুষিত
কর
কেন।
এ বিচার।’৬ অর্থাৎ
কাজির
বিচারকে
সামনে
রেখে
ঔরংজেব
দারার
মৃত্যুদন্ডকে
যথার্থ
বলে মনকে মানাতে চাইছেন।
তারপরে
দিলদার
বলছে
: ‘জাঁহাপনা,
সে
কাজীরা
যখন
দারার
মৃত্যুদন্ড
উচ্চারণ
কর্চ্ছিল,
তখন
তারা
ঈশ্বরের
মুখের
দিকে
চেয়ে
ছিল
না।
তখন
তারা
জাঁহাপনার
সহাস্য মুখখানি কল্পনা কর্চ্ছিল,
আর
তার
সঙ্গে
মনে
মনে,
তাদের
গৃহিণীদের
নতুন
অলঙ্কারের
ফর্দ্দ
কর্চ্ছিল।’
তখন
ঔরংজেব
বললেন
: ‘...দিলদার
তুমি
সত্য
কথা
বলেছো।
তুমি
আজ
দারাকে
বাঁচালে!’
(দিলদারের
প্রস্থানের
পর
আবার
ঔরংজেবের
স্বগতোক্তি)
দারা
বাঁচুন,
আমায় যদি তার জন্য
সিংহাসন
দিতে
হয়
দেব!
অতখানি
পাপ
- যাক্
এ মৃত্যুদন্ড
ছিঁড়ে
ফেলি...। (তারপর
শায়েস্তা
খাঁ
ও জিহন
খাঁর
প্রবেশ
করলে
ঔরংজেব
বলেন)
: বিচারে
ভাই
দারার
প্রাণদন্ড
হয়েছে।...
কিন্তু
তাঁকে
মার্জ্জনা
করেছি
No comments:
Post a Comment