Thursday, March 23, 2017

ট্র্যাজিডি হিসেবে ইডিপাস নাটকের সফলতা আলোচনা কর।

1.                   ট্র্যাজিডি হিসেবে ইডিপাস নাটকের সফলতা আলোচনা কর।
নাটকের বিষয়বস্তু ও তার পরিণতি বিষয়ক বিভাজনে তিন ধরনের নাটকের মধ্যে ট্র্যাজেডি নাটক অন্যতম। গ্রকি নাটক মূলত ধর্মপ্রবণ বলে এতে মানুষের জীবনে ভগবানের বিধান কীভাবে কাজ করে, তা দেখানো হয়।
এরিস্টটলের মতে- ট্র্যাজিডিতে কোন বৃহৎ বা মহৎ জীবনে সক্রিয় হয়ে ঘটনার ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে রূপান্তরিত হয় নাটকীয় ঘটনাবস্তু সুগভীর, শব্দ সম্পদ চয়ন, গীতাদি সংযোগে বহিরঙ্গ সুগঠিত। একটিমাত্র পরিণামে পতিত হয়ে সামাজিক মনে করুণা জীবনে ভুল-ভ্রান্তির বশে দৈব-দুর্বিপাকি নিপীড়িত হতে পারেন, কিন্তু তার চরিত্র সৎ ও জীবন সত্যের অনুগ্ ট্র্যাজিডিতে চরিত্র অপেক্ষা আখ্যান প্রধান্
ইডিপাস….
ইডিপাসের দুঃখেরই নাটকীয় রসরূপ। কেননা এত আত্নদ্বন্দ্বে  মানবাত্নার সকরুণ বেদনা ও সুকঠোর পীড়নের চিত্র উদঘাটিত – যার পরিণতি বিষাদে। ইডিপাসের জীবন ট্র্যজিক হয়ে উঠেছে। মহৎপ্রাণের গভির আবেগ থেকেই কেবল ট্র্যাজডি উৎসারিত হতে পারে।
ইডিপাস নিজের ভাগ্য নিজেই সূটিত করেছে তার স্বাধীন সক্রিয়তা দিয়ে। কিন্তু তার ইচ্ছাশক্তি ও স্বধীন সক্রিয়তার মূলে রয়েছে স্বর্গের দেবতার নির্দেশ এবং তার চিরন্তন বিধান।
ইডিপাস অজ্ঞাতসারে বিশ্ববিধান লঙ্ঘন করেছ্ জন্মদাতা লেয়াসকে হত্যা এবং গর্ভধারিণী জোকাস্টার পাণিগ্রহণ করার ফলে বিশ্ববিধানের নিয়মনীতি বিচলিত ও লঙ্ঘিত হয়েছে।  তার কন্যাদ্বয় তার কাছে এল ইজিপাস বলেছে- আমার চোখ আমি নষ্ট করেছি। তোমরা বড় হলে বুঝবে কেন আমি আমার  পৃথিবীকে অন্ধকার করেছিলাম। বড় হয়ে প্রার্থনা কর শান্তি ও নিশ্চিন্ততায় জীবন কাচুক। আমার অকল্যাণ যেন তোমাদের স্পর্শ না করে।“
ইডিপাসের অনুভূতি এমন তীব্য-তীক্ষ্ন বলেই স্নেহ-প্রীতি-মায়া-মমতার পাবশ্য তাকে এতখানি কাতর করে দুলেছে। অসহায় কন্যাদ্বয়ের কথা ঝেবে তার অন্তর বিমথিত হয়েছে। ইডিপাসেরে ট্র্যাজিডি আমাদের প্রতীতি জন্মায় যে, ভাগ্য বিরূপ হতে পারে, বিন্ত মুনুষ ইচ্ছাশক্তি উ সহনশক্তি বলে বলীয়ান হয়ে সেই ভাগ্যকে অতিক্রম করতে পারে। ইডিপাসের জীবন ভাগ্য ও জীবনগত ট্র্যাজেডি, প্রবল দ্বিধা-দ্বন্দ্ব সংঘাত এবং প্রচন্ড আবেগ থেকে উদ্ভূত। তার ট্র্যাজেডিতে আমরা বিমূঢ়, বিভ্রান্ত ও বিচলিত। স্থির ও নিঃসংশয় সিদ্ধান্তে উপনীত হতে অক্ষম। ইডিপাসের বেদনায় তার প্রতি করুণায় আমরা বিগলিত হই, আবার কখনও তার শক্তিমত্তার পরিচয় পেয়ে শ্রদ্ধান্জলি অর্পন করি।
ইডিপাসের পরিণতি দেখে আমরা মানবজীবনের চরম রহস্যের সম্মুখীন হই, জীবনের সর্বজনীন দুঃখের স্বরূপ উপলব্ধি উ আস্বদন করি। ব্যক্তিগত দুঃখ ভুলে বৃহৎ আবেগে সব মানুষের সাথে এক নিগূঢ় ঐক্যসুত্রে সম্মিলিত হই্। ইডিপাসের বেদনঅয় সকল নাগরিক একই সাথে কাদে এবং২ আনন্দ ভোগ করে- এখানেই ট্র্যাজেডি হিসেবে ‘ইজিপাস’ নাচরেক বিশেষ মাত্রা।
ইডিপাস”” নাটকে বিশ্ববিধানের অলঙ্ঘ্য ও সুদৃঢ় নিয়ম নীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। 

No comments:

Post a Comment